লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় স্টেমসেল থেরাপি

Ecare Solutions

স্টেমসেল থেরাপি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম অনুষঙ্গ। চিকিৎসার যেভাবে আধুনিকায়ন হচ্ছে তাতে ধরে নেওয়া যেতে পারে যে সামনে পার্সোনালাইজড মেডিসিনের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। এক প্যারাসিটামলে ১০০ জনের ১০ রোগের চিকিৎসা করার দিন ফুরিয়ে আসছে। এক রোগের জন্য এক মেডিসিন ব্যবহারের দিন আর খুব বেশি দূরে নয়।

এ ক্ষেত্রে স্টেমসেল থেরাপির ভূমিকা যে অন্যতম হতে যাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। লিভার রোগের ক্ষেত্রে বোধ করি এ কথাগুলো আরো বেশি করে প্রযোজ্য। কারণ লিভারের একটি বড় গুণ হচ্ছে এর রিজেনারেশনের সক্ষমতা। পৃথিবীর নানা দেশে নানাভাবে স্টেমসেল ব্যবহার করে লিভারের চিকিৎসা করা হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় অটোলোগাস হেমোপয়েটিক স্টেমসেল ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বা সংক্ষেপে স্টেমসেল থেরাপির ব্যবহার শুরু করা হয়। সেই থেকে আজ অবধি এ দেশের শতাধিক লিভার সিরোসিস রোগী স্টেমসেল গ্রহণ করে উপকৃত হয়েছেন।

রোগীর সম্মতি নিয়ে রোগীকে গ্র্যানুলোসাইট কলোনি স্টিমুলেটিং ফেক্টর ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীর অস্থিমজ্জা থেকে রক্তে স্টেমসেল মোবিলাইজ করা হয়। তারপর এফেরেসিস মেশিন ব্যবহার করে ওই স্টেমসেলগুলোকে রক্ত থেকে আলাদা করে নিয়ে এসে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনের গাইডেন্সে সরাসরি রোগীর লিভারে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, স্টেমসেল থেরাপি করলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীদের লিভার ফাংশনগুলোর উন্নতি হয় এবং তাঁরা দীর্ঘদিন ভালো থাকেন। যাঁদের মাসে দুই-তিনবার করে হাসপাতালে ভর্তি হতে হতো, তাঁদের হয়তো তিন মাসে একবার ভর্তি হলেই চলছে। একইভাবে অনেকের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনেরও সহজে আর দরকার পড়ে না।

স্টেমসেল থেরাপি করলে বেশির ভাগ লিভার সিরোসিস রোগীর কমবেশি উন্নতি হয় তার পক্ষে বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাছে আছে, আছে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক জার্নালে বেশ কিছু প্রকাশনাও। আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে লিভার সিরোসিসের এই বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি বাংলাদেশের গর্বের তালিকায় আরো একটি পালক যোগ করতে যাচ্ছে।

Ecare Solutions
শর্টলিংকঃ