
নিউজ ডেস্ক: রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠেয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সর্ববৃহৎ এই দলটির জেলা সম্মেলন ঘিরে কর্মীদের উৎসব আমেজের পাশাপাশি মূল নেতৃত্ব নিয়ে কানাঘোঁসা, পাওয়া না পাওয়া, ভালো মন্দ প্রভৃতি বিষয়ে। আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকের নাম এলেও তৃণমূলের আস্থা এবং ভরসার স্থল বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে ঘিরেই। তিনি এবার সভাপতি প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও কর্মীদের কাছে আসাদেই ভরসা কেন ? এ ব্যাপরে সরজমিনে নেতা কর্মীদের কাছ থেকে জানা যায় অনেক কথা।

নাম প্রকাশ না করে থানা পর্যায়ের একজন কর্মী বললেন, ‘ক্ষমাতসীন আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্ব কি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে পৌছানোই একটি বড় বিড়ম্বনা! পাওয়াই যায় না, পেলে কথা বলা যায় না, কথা বললে ধমক খেতে হয়, পাহাড়সম নীতিবাক্য শুনতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে আসাদুজ্জামান ব্যাতিক্রম। সবসময় তাকে অফিসে পাওয়া যায়, ফোনে পাওয়া যায়। কর্মীদের প্রয়োজনে থানা থেকে হাসপাতাল সকল জায়গাতে দৌড়ে যান তিনি।
‘জেলা পর্যায়ের আর একজন নেতা বললেন, আসাদের পরিবার রাজনৈতিক পরিবার। নানান টানাপোড়নেও পুরো পরিবার রাজনীতিতে আছেন সুনামের সাথে। কোন অপকর্মের সাথে এই পরিবারের কেউ জড়িত নয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজশাহীতে উল্লেখযোগ্য প্রতিটি কাজেই আসাদসহ এই পরিবারের কেউ না কেউ জড়িত থাকে। তাই আমরা আসাদকেই ভরসা বলে জানি।
নগরীর একটি মোড়ে কয়েকজন নেতা কর্মী মিলে আডডা দিচ্ছিলেন। পাশ থেকে শোনা গেল, ওয়ার্ড ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে থানা, মহানগর ছাত্রলীগ, জেলা যুবলীগের মূল নেতৃত্বে একাধিকবার নির্বাচিত হয়েও যথাসময়ে নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা কমিটি গঠনে পক্ষ বিপক্ষ বিবেচনায় না নিয়ে সাবেক সকল ছাত্রলীগ নেতাদের সম্পৃক্ত করেছেন। তাই আসাদকেই আমরা ভরসার স্থল হিসেবে জানি।
অতীতে সাধারণ সম্পাদক হয়ে জেলা আওয়ামী লীগে আসাদের কার্যক্রম সিমূহ-নিয়মিত জাতীয়, দলীয় দিবস পালন ও সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরন। লক্ষীপুরে বঙ্গবন্ধুর মূরাল তৈরি। ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির সহযোগিতায় দলীয় কার্যালয়ের জন্য ১০ কাঠা জমি ক্রয়। সারাদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম জেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি সভার আয়োজন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়মিতভাবে চিত্রাংকন ও কুইজ প্রতিযোগিতা করা। দলীয় দিবস সমূহ চিহ্নিত করে ক্যালেন্ডার প্রকাশ। দেশরত্ন শেখ হাসিনার চলমান উন্নয়ন নিয়ে প্রামাণ্য চিত্র ‘দিন বদলের দিন’ নির্মাণ ও প্রচারণা, নিয়মিত দলীয় সভা করা, যদিও বিগত ১ বছর সভাপতির অসহযোগিতায় এটি করা সম্ভব হয়নি। সহযোগি সংগঠনগুলোর সাথে নিয়মিত সভা করা, তাদের কাজে অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা করা। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের অফিস খোলা থাকে সকাল ৯ টা থেকে রাত্রি ১২ টা পর্যন্ত। সেটিও আসাদেরই কৃতিত্ব। শুধু রাজনীতির মাঠেই নয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, ক্লাব প্রতিষ্ঠার সাথেও আসাদ সম্পৃক্ত এবং উদ্যোক্তা। ছিলেন এফবিবিসিসিআই এর জেনারেল বডির সদস্য, রাজশাহী চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সাবেক উপদেষ্টা।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে জেল খেটেছেন। ১/১১ পরবর্তী সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে সেদিনই নেত্রীর মুক্তি দাবি করে আসাদের নেতৃত্বে রাজশাহীতে মিছিল বের হয়। শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে সাবেক ছাত্রনেতাদের সংগঠিত করে কর্মসূচি প্রদানের জন্য প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের নিকট কপি প্রদান। আসাদের নেতত্বে ৬০০ জনের অধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত ও স্বাক্ষর নিয়ে শেখ হাসিনার মুক্তি দাবি করে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তত্বাবধায়ক সরকারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান। নেত্রীর মুক্তির দাবি করে বাংলাদেশে এটি প্রথম গণস্বাক্ষর ও স্মারকলিপি প্রদান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ছাত্র গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনায় প্রশাসন আসাদকে নানামুখি হয়রানি ও মানষিক নির্যাতন করে। রাজশাহীর জেলার সকল সংসদীয় আসনের নির্বাচনে ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি একই ভূমিকা পালন করেন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনসহ অন্যান্য পৌরসভার নির্বাচনেও তিনি নিবিড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
নিরবে-নিভৃতে-প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু চর্চাতে, নেতৃত্ব তৈরিতে, কর্মী তৈরিতে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সামর্থ্য বৃদ্ধিতে, মুক্তচিন্তার চর্চাতে যে নামটি সবার আগে আসে। দলের যেকোন প্রয়োজনে যে নামটি সবার আগে আসে। শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে যিনি সবার আগে সাহসের সাথে সামনে দাঁড়ান, তিনি আর কেউ নন, তিনি আসাদুজ্জামান আসাদ। তাই রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে আসাদের উপরেই কেন্দ্র আবারও ভরসা রাখবে বলে আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মীরা বিশ্বাস করেন।
বাংলা প্রবাহ/এএল
